কক্সবাজারের একাডেমি মাঠে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বল হাতে দুর্দান্ত শুরু করেও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দল। ম্যাচের শুরুতে পাকিস্তানকে মাত্র ৮৮ রানে অলআউট করে স্বাগতিকরা নিজেদের পক্ষে ম্যাচটি নিয়ে গেলেও পরে ব্যাটিংয়ে মারাত্মক ব্যর্থতার কারণে ১৩ রানের হতাশাজনক হার বরণ করতে হয়েছে তাদের।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমেই চাপে পড়ে পাকিস্তান দল। ইনিংস জুড়ে বাংলাদেশের বোলাররা ধারাবাহিক চাপ তৈরি করেন। বিশেষ করে জারিন তাসনিম লাবণ্য ছিলেন অসাধারণ—তিনি গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মুহূর্তে উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ভেঙে দেন। তাঁর নিয়ন্ত্রিত স্পিন এবং যথাযথ লাইন-লেংথে একের পর এক ব্যাটার বিপদে পড়ে। তাঁর ৪ উইকেটের আলোয় পাকিস্তানের পুরো দল ১৯ ওভার ৪ বলে অলআউট হয়ে মাত্র ৮৮ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের বোলারদের সম্মিলিত সাফল্যে তখন ম্যাচটা স্বাগতিকদের নাগালের মধ্যেই ছিল।
তবে সহজ লক্ষ্য তাড়ায় নেমেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সুমাইয়া আক্তার সুবর্ণা আউট হন। পরের ওভারে সাদিয়া ইসলাম ফিরলে চাপ আরও বেড়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরই মাইমুনা নাহার স্বর্ণা মণি প্রথম বলেই আউট হয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরেন। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই ফারজানা ইয়াসমিন মেধা আউট হলে বাংলাদেশ মাত্র ২২ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে গভীর সংকটে পড়ে।
এই অবস্থায় একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দলের ইনিংস গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টায় ছিলেন আরিত্রী নির্জনা মণ্ডল। তিনি অনেকটা সময় উইকেটে থাকলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি; ৩৮ বলে ২০ রান করে আউট হন। পরবর্তীতে সাদিয়া আক্তার কিছুটা লড়াই করে ২০ বলে ১৬ রান করেন এবং ববি খাতুন ১৮ বলে ১৩ রান যোগ করেন, কিন্তু কেউই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ফেরাতে সক্ষম হননি। পরপর উইকেট হারাতে হারাতে শেষ পর্যন্ত ইনিংসের শেষ বলের আগেই ৭৫ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ, যা জয় থেকে তাদের ১৩ রান দূরে রেখে দেয়।
পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে সবচেয়ে কার্যকর ছিলেন শাহার বানু। তিনি ৩টি উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের টপ ও মিডল অর্ডার বিপর্যস্ত করে দেন। রোজিনা আকরাম এবং মেমোনা খালিদও চমৎকার বোলিং করে দু’জনই ২টি করে উইকেট নেন। তাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ বোলিংয়ের কাছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা কোনোভাবেই নিজেদের ঢেলে সাজাতে পারেননি, ফলে দুর্দান্ত বোলিং সত্ত্বেও জয় অধরাই রয়ে যায় স্বাগতিকদের জন্য।
বাংলাদেশের দারুণ বোলিং ও পাকিস্তানের দুর্বল ব্যাটিংয়েও যেখানে ম্যাচটি সহজেই জেতা সম্ভব ছিল, সেখানে ব্যাটিং ব্যর্থতাই শেষ পর্যন্ত দলের পরাজয়ের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়।