মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উখিয়া

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক রাতে দুই অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে গেল স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বসতঘর

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এক রাতের ব্যবধানে দুটি পৃথক স্থানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে এবং কয়েকটি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শীত মৌসুমে ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্যাম্পজুড়ে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের মধুরছড়া এলাকার ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকে অবস্থিত একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ও স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে এবং পুড়ে গেছে মূল্যবান চিকিৎসা সরঞ্জাম।

২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য দাতব্য সংস্থা ওবাট হেলপারস ইউএসএ ‘ওবাট হেলথ পোস্ট’ নামে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমানে হিউম্যান ইন্টারন্যাশনাল ইউএসএ–এর অর্থায়নে এবং ক্যাম্প প্রশাসনের সহায়তায় এটি পরিচালিত হচ্ছিল। ওবাট হেলপারস বাংলাদেশের হেলথ কো-অর্ডিনেটর চিকিৎসক মাহামুদুল হাসান সিদ্দিকী রাশেদ জানান, আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডে পুরো স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পুড়ে গেছে। আগুনের কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

‘মালয়েশিয়া হাসপাতাল’ নামে পরিচিত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পুড়ে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন আশ্রিত রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিক বলেন, এই হাসপাতাল ছিল তাদের চিকিৎসার প্রধান ভরসাস্থল। এখান থেকে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাসিন্দারা বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পেতেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ডলার ত্রিপুরা জানান, একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে এবং ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। তদন্ত শেষে আগুনের প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি-ব্লকে আরেকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত পাঁচটি বসতঘর পুড়ে যায়। উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর কুতুপালং ১ ডব্লিউ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সহস্রাধিক ঘর পুড়ে গিয়েছিল এবং একজনের মৃত্যু হয়েছিল।

বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

ক্যাটাগরি