মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সারা দেশ

সমুদ্রে মাছের অতিরিক্ত আহরণে কঠোর বিধিনিষেধের ওপর জোর: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

ছবি: সংগৃহিত

সমুদ্রে মাছের অতিরিক্ত আহরণ নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোরভাবে বিধিনিষেধ প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেছেন, বড় জাহাজ নিয়ে সমুদ্রে গিয়ে নির্বিচারে মাছ ধরার সুযোগ দেওয়া যাবে না; তাদের অবশ্যই নিয়মের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে অনেক সময় অবাঞ্ছিত ও খাবার অযোগ্য মাছ ধরা পড়ে আবার সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়—যা সাগরের পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই জালের ফাঁস নিয়ন্ত্রণ এবং মাছ আহরণের পদ্ধতির আধুনিকায়ন অত্যন্ত জরুরি।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটি (ডব্লিউসিএস) ও ওয়ার্ল্ডফিশ আয়োজিত ‘সুস্থ সাগর (হেলদি ওশান)’ বিষয়ক ইনসেপশন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, মাছ শুধুই বাণিজ্যিক পণ্য নয়—এটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। তাই সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে সব পক্ষের স্বার্থ সমন্বয় করে কাজ করা প্রয়োজন।

তিনি আরও জানান, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, মৎস্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সমুদ্রের সম্পদ রক্ষায় কাজ করছে। তবে মাছ ধরা শুধু বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গিতে করা হচ্ছে কি না, সেটিও বিবেচনায় নিতে হবে, কারণ খাদ্য নিরাপত্তাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

ক্ষতিকর জালের ব্যবহারকে সবচেয়ে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ফাঁস জাল ও বেহেন্দি জালের মতো নিষিদ্ধ জালে বিভিন্ন আকারের মাছ ধরা পড়ে মারা যাচ্ছে, যা মাছের প্রাকৃতিক মজুদকে দ্রুত কমিয়ে দিচ্ছে।

বঙ্গোপসাগরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, জাতিসংঘের গবেষণা জাহাজের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত সাত বছরে সাগরে মাছের প্রাপ্যতা প্রায় ৭৮ শতাংশ কমে গেছে। অনেক স্থানে দেখা দিয়েছে সামুদ্রিক অক্সিজেন ঘাটতি এবং প্লাস্টিক দূষণও বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। তবে ইতিবাচক দিক হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক জরিপে নতুন আরও ৬৫ প্রজাতির মাছ শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৫টি প্রজাতি আগে বিশ্বের কোথাও শনাক্ত করা হয়নি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সচিব-ইন-চার্জ) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমোডর শেখ মাহমুদুল হাসান এবং মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ।

স্বাগত বক্তব্য দেন ডব্লিউসিএস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. ফারুক-উল ইসলাম।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট

ক্যাটাগরি