প্রথম আলো–ডেইলি স্টার ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে হামলা ৩১ জন শনাক্ত, গ্রেপ্তার অন্তত ৯
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের শীর্ষ দুই দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার, পাশাপাশি সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ও উদীচীর কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনকে শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এসব ঘটনায় সোমবার সকাল পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অন্তত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আয়োজিত বৈঠকে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার ৯ জনের মধ্যে ৭ জনের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা হলেন—
মো. কাশেম ফারুক, মো. সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন, মো. নাইম, ফয়সাল আহমেদ প্রান্ত, মো. সোহেল রানা ও মো. শফিকুল ইসলাম।
এ ছাড়া কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আরও ২ জনের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, হামলার সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করেই ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের কাছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঘটনায় ৩ জনকে ভিডিওর মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে।
লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কেনা গ্রেপ্তারদের মধ্যে ঢাকার তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. নাইমকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে ৫০ হাজার টাকা লুটের অর্থসহ গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা লুটের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই অর্থ দিয়ে তিনি মোহাম্মদপুর থেকে একটি টিভি ও একটি ফ্রিজ কিনেছিলেন, যা ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার রাকিব হোসেনকে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে ভিডিওতে শনাক্ত করা হয়েছে। হামলার ছবি তিনি নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এ ছাড়া মো. সোহেল রানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা এবং মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং বাকি শনাক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রথমে শাহবাগে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে একদল দুর্বৃত্ত কারওয়ানবাজারে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এরপর ধানমন্ডিতে ছায়ানট এবং পরদিন উদীচীর কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়।
সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম