মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পর্যটন

বড়দিনে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল, উৎসবের আমেজে সৈকত নগরী

ছবি: কক্সবাজার সংবাদ

খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিনে কক্সবাজারে দেখা গেছে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটকের সমাগম। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই সমুদ্র শহরজুড়ে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

সৈকতের বালুকাবেলায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয়জনদের সঙ্গে অনেকেই এসেছেন অবকাশ যাপনে। কেউ সমুদ্রের নীল জলে পা ভিজিয়েছেন, কেউবা বালুকাবেলায় ছবি তুলে স্মরণীয় করে রাখছেন সময়টা।

সিলেট থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা সৌরভ বলেন,কক্সবাজার আমার খুব প্রিয় জায়গা। সুযোগ পেলেই চলে আসি। শীতের এই সময়টায় এখানকার পরিবেশ অন্যরকম ভালো লাগে। সমুদ্র আমাকে বারবার মুগ্ধ করে।
তবে আনন্দের ভিড়ের মাঝেই কিছু ভোগান্তির চিত্রও চোখে পড়ছে। অতিরিক্ত ভাড়া, খাবারের উচ্চমূল্য এবং কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর উৎপাত পর্যটকদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে আসা ব্যবসায়ী মনির বলেন,এখানে সবকিছুর দাম তুলনামূলক বেশি। অল্প দূরত্বেও অটোরিকশা চালকরা বেশি ভাড়া দাবি করেন। এসব বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার।

বড়দিন উপলক্ষে শহরের অভিজাত হোটেল-মোটেলগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল আলো ও সাজে। পর্যটকদের আকর্ষণে থাকছে বিশেষ আয়োজন। হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি জানিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শহরের প্রায় পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলের সব কক্ষ আগেই বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই মৌসুমে শত কোটি টাকারও বেশি বাণিজ্য হবে।

হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন,সাপ্তাহিক ছুটি ও বছরের শেষ উপলক্ষে পর্যটকের চাপ অনেক বেশি। সব মিলিয়ে এই মৌসুমে পর্যটন ব্যবসা শত কোটি টাকার সীমা ছাড়াবে বলে আমরা আশাবাদী।
পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠে রয়েছে টুরিস্ট পুলিশ। কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ জানান,পর্যটকদের নিরাপত্তাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব। হয়রানি প্রতিরোধে নিয়মিত মনিটরিং চলছে। যেকোনো প্রয়োজনে পর্যটকরা হেল্পলাইন নম্বর ০১৩২০১৬০০০০-এ যোগাযোগ করলে সহায়তা পাবেন।

সব মিলিয়ে বড়দিনের ছুটিতে কক্সবাজার পরিণত হয়েছে উৎসব, আনন্দ আর মানুষের মিলনমেলায়—যেখানে সমুদ্র, প্রকৃতি ও পর্যটনের জোয়ার একসঙ্গে বইছে।

ক্যাটাগরি