২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন বিক্ষোভকারীরা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে দাফনের পর তার হত্যার বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানীর শাহবাগ মোড়। শনিবার বিকাল থেকে টানা তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ চলার পর সোয়া ৫টার দিকে বিক্ষোভকারীরা সড়ক ছেড়ে দিলে শাহবাগ কেন্দ্রিক এলাকায় ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। যদিও মূল সড়ক ছেড়ে দেওয়া হলেও আশপাশের কিছু অংশে বিক্ষোভকারীদের একটি ক্ষুদ্র অংশ তখনও অবস্থান করছিল।
এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টার পর ইনকিলাব মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব ও ডাকসু নেত্রী ফাতিমা তাসনিম জুমার ফেসবুক আহ্বানে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শাহবাগে জড়ো হন ছাত্র-জনতা। অল্প সময়ের মধ্যেই শাহবাগ চত্বর জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা’ এবং ‘মোদি না হাদি? হাদি হাদি’ স্লোগানে পুরো এলাকা প্রকম্পিত করে তোলে।
বিক্ষোভকে ঘিরে শাহবাগ এলাকায় নেওয়া হয় নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, এপিবিএন ও বিজিবি সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতির পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয় জলকামান ও এপিসি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে মিন্টো রোড অভিমুখী সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর আগে বেলা ৩টা ২০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে শরিফ ওসমান হাদিকে দাফন করা হয়। দাফনকালে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহেদ এবং প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানোর পর তা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়। শনিবার সকালে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নেওয়া হয়, সেখানে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দাফনের মধ্য দিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হন জুলাই আন্দোলনের এই সম্মুখসারির নেতা।