চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেনের দাবিতে একাধিক স্থানে অবরোধ, দীর্ঘ যানজট
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণের দাবিতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকায় আজ রোববার সকাল থেকেই একযোগে সড়ক অবরোধ চলছে। ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন আন্দোলন’-এর ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে-চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া এবং কক্সবাজারের চকরিয়া বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সকাল সাড়ে নয়টার দিকে লোহাগাড়ার আমিরাবাদ স্টেশন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের দুই পাশে এক কিলোমিটারজুড়ে থেমে আছে সারি সারি যানবাহন। হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার আর স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৯টা থেকেই অবরোধকারীরা রাস্তা দখলে নেন। কাছাকাছি সাতকানিয়ার কেরানিহাট এলাকাতেও একই সময় মহাসড়ক অবরোধ শুরু হয়।
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী সেতু এলাকায় সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় অবস্থান কর্মসূচি। ব্যানার-ফেস্টুন হাতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে সেখানে।
পুলিশ সরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও আন্দোলনকারীরা জানিয়ে দেন, দাবি পূরণের ঘোষণা ছাড়া কোনোভাবেই সরবেন না।
আন্দোলনকারীদের অন্যতম সমন্বয়ক ইব্রাহিম ফারুক ছিদ্দিকী বলেন, বিকেল ৪টা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। রোগী, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিমানবন্দরমুখী গাড়ি, পরীক্ষার্থী—এসব জরুরি যান চলাচলে বাধা দেয়া হবে না।
দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দরবানের কোটি মানুষের প্রধান যোগাযোগপথ এই মহাসড়ক। মাত্র দুই লেনের হওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটে দুর্ঘটনা, দীর্ঘ যানজট এবং প্রাণহানি।
সাবেক ছাত্রনেতা সায়েদ হাসান বলেন, এই সড়ক প্রতিদিন হাজারো গাড়ি বহন করে। দুই লেনে এত চাপ সহ্য হয় না। উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার দক্ষিণাঞ্চল জরুরিভাবে ছয় লেন হওয়া জরুরি।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন আন্দোলনের সংগঠক তামিম মির্জা জানান, মানববন্ধন, স্মারকলিপি, সংবাদ সম্মেলন, সব হয়েছে। কিন্তু সরকার এখনো কোনো স্পষ্ট ঘোষণা দেয়নি। তাই বাধ্য হয়েই অবরোধ।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ব্লকেড সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক শুধু পর্যটন বা লোকাল ট্রাফিক নয়; দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম আঞ্চলিক মহাসড়কের একটি। কক্সবাজার বিমানবন্দর, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন সব মিলিয়ে উন্নয়ননির্ভর এই অঞ্চলের জন্য ছয় লেন এখন প্রয়োজনীয়তা নয়, জরুরি অবকাঠামো।
অবরোধকারীদের দাবি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত না আসায় অসন্তোষ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে।