মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজার জেলা

দুর্বৃত্তদের গুলিতে শহরে দুই যুবদল নেতা আহত: দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ পুলিশ সুপারের

ছবি: কক্সবাজার সংবাদ

কক্সবাজার শহরের উত্তরণ আবাসিক এলাকা সোমবার রাতেই কেঁপে ওঠে অতর্কিত গুলির শব্দে। মোটরসাইকেল যোগে এসে হেলমেট পরিহিত দুই দুর্বৃত্ত মুহূর্তের মধ্যে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। লক্ষ্যবস্তু ছিলেন দুই যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম (৩৫) ও মোহাম্মদ ফারুক (৩৪)। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটে এই ভয়াবহ হামলা, যা মুহূর্তেই এলাকায় তৈরি করে আতঙ্কের পরিবেশ।

গুলিবিদ্ধ দুইজনকে প্রথমে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, তাদের অবস্থা গুরুতর। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর ২০২৫) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এ.এন.এম. সাজেদুর রহমান। উত্তরণ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় গিয়ে তিনি পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং থেকে তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। সদর মডেল থানার ওসি ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের দ্রুততম সময়ে হামলায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের নির্দেশ প্রদান করেন তিনি।

পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তদন্ত জোরদার করা হয়েছে। দায়ীদের চিহ্নিত করা মাত্রই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, গুলির শব্দ শুনে বাসিন্দারা বাইরে এসে দুই যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত উদ্ধার করলেও তাদের শারীরিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত নাজুক। এলাকাজুড়ে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে।

হামলার পেছনে পুরনো বিরোধের ইঙ্গিতও মিলছে। লারপাড়ার এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার জেরে সাইফুলের ভাই সাইদুল এবং চাচাতো ভাই কায়সারকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা সাইফুলের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত। তার ধারণা, পুরনো সেই রেষারেষিই হয়তো নতুন এই হামলার সূত্রপাত।

হাসপাতালে আহতদের দেখতে এসে কক্সবাজার পৌর যুবদলের সভাপতি আজিজুল হক সোহেল বলেন, সাইফুল ও ফারুক দুজনই সক্রিয়ভাবে যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এটি পরিকল্পিত হামলা ছাড়া কিছুই নয়। যারা এর পেছনে আছে তাদের দ্রুত আটক করতে হবে।

এদিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছমি উদ্দিন জানান, সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে। খুব দ্রুতই ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

হঠাৎ ঘটে যাওয়া এই হামলায় উত্তরণ এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কগ্রস্ত। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নাকি পুরনো হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ? এখনো স্পষ্ট নয় কিছুই। তদন্তই বলবে, কারা এবং কেন এই হামলার সাথে জড়িত।

ক্যাটাগরি