জাহাজ বিলম্বকে কেন্দ্র করে পর্যটকের দুর্ব্যবহার-ইউএনওকে গ্রেপ্তারের হুমকি
কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজের যাত্রায় সময়সূচি পরিবর্তন হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে এক পর্যটক প্রকাশ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা তাসনিমকে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার দিকে নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে ঘটে এই ঘটনাটি, যার ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ইউএনও তানজিলা তাসনিম জানান, সেদিন সকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্ব পালনের সময় তিনি শুনতে পান কিছু পর্যটক অভিযোগ করছেন, তাদের জাহাজ নির্ধারিত সময়ের আগে ছেড়ে গেছে। বিষয়টি জানার জন্য তিনি কাছে গেলে ইব্রাহীম নামের এক ব্যক্তি নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যকে নির্দেশ দেন, যেন ইউএনওকে “গ্রেপ্তার” করা হয়। ইউএনওর বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তিনি এ ধরনের আদেশ দেওয়ার কোনো ক্ষমতা রাখেন না, এবং হয়তো তিনি বুঝতে পারেননি কার সঙ্গে কথা বলছেন। পুরো ঘটনাটির ভিডিও সংরক্ষিত আছে বলেও তিনি জানান।
অভিযুক্ত ইব্রাহীম পরে বলেন, তিনি ইউএনওকে চিনতে পারেননি এবং সে জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তার দাবি, তাদের টিকিটে জাহাজ ছাড়ার সময় ছিল সকাল ৭টা, কিন্তু ঘাটে এসে জানতে পারেন সেটি ৬টায় ছেড়ে গেছে।
অন্যদিকে সীক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর ব্যাখ্যায় জানান, নাব্যতা সংকট ও জোয়ার–ভাটার কারণে জাহাজের সময়সূচি পরিবর্তনশীল থাকে। সেদিন বেক্রুজ নামের জাহাজটি ঘাট পরিবর্তন করে অন্য ঘাটে গিয়েছিল। পর্যটকরা সেটিকে ছেড়ে যাওয়া ভেবে ভুল বোঝাবুঝিতে পড়ে। পরে ওই কর্মকর্তা এবং তার সঙ্গে থাকা আরও ১১ জন পর্যটক কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজে যাত্রা করেন।
প্রসঙ্গত, ১ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। এ মৌসুমে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যটকদের দ্বীপে রাত্রীযাপনের সুযোগ থাকলেও পরিবেশ রক্ষায় সরকারের ১২ দফা নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
ঘটনাটি শুধু দায়িত্ব পালনরত সরকারি কর্মকর্তার মর্যাদা অবমাননার উদাহরণই নয়, বরং পর্যটন ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা রক্ষার চ্যালেঞ্জকেও স্পষ্ট করে তুলে ধরেছে।